স্টপলস
একটা ট্রেডে আপনার জন্য সহনশীল লুজিং মাত্রা। এটা শুধু আপনার জন্য কারন অন্যের
সহনশীল মাত্রা আপনার থেকে ভিন্ন হতে পারে।
Video
চারটা পদ্ধতিতে স্টপলস নির্ধারণ করা যায়,- পারসেন্টেজ স্টপ (Percentage Stop)
- ভোলাটিলিটি স্টপ (Volatility Stop)
- চার্ট স্টপ (Chart Stop)
- টাইম স্টপ(Time Stop)
১। পার্সেন্টেজ মেথড
Parcentage method
উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি আপনার ট্রেড ক্লোজ করার আগে আপনার স্টকটির 10% মূল্য হারাতে সন্তুষ্ট রয়েছেন। আপনি এখন ৫০টাকায় ট্রেড ওপেন করেছেন, তাহলে আপনি ৫০ x ১০% = ৫ টাকা মূল্য হারাতে রাজি আছেন, তাহলে আপনার স্টকটির স্টপলস সেট করা হবে ৫০ - ৫ = ৪৫ টাকা।
২। ভোলাটিলিটি স্টপ মেথড
Volatality Stop method
ভোলাটিলিটি - কোন নির্দিষ্ট সময়ে কোন মার্কেট কতটা উপরে বা নিচে যাইতে পারে।
এটি একটি স্টপ লস পদ্ধতি যা বাজারের অবস্থার পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। যখন অস্থিরতা বেশি থাকে, তখন ব্যবসায়ীরা আরও বেশি বাজারের পরিবর্তনগুলির জন্য অ্যাকাউন্টে বড় স্টপ লস ব্যবহার করে। যখন অস্থিরতা কম থাকে, ব্যবসায়ীরা আরও রক্ষণশীল স্টপ লস ব্যবহার করেন। স্টপ লস এবং লাভ একে অপরের সাথে সংযুক্ত।
বুলিঞ্জার ব্যান্ড একটা ভোলাটিলিটি ব্যান্ড। বুলিঞ্জার ব্যান্ডের নিচে (beyond the band) স্টপলস সেট করাও একটা উত্তম পদ্ধতি।
বুলিঞ্জার ব্যান্ড নির্ভর ভোলাটিলিটি স্টপ লস
ATR নির্ভর ভোলাটিলিটি স্টপ লস
বা ট্রেইলিং স্টপ লস।
মূল্য যখন বাড়তে থাকে তখন এন্ট্রি লেভেলের স্টপ লস অনেক নিচে অবস্থান করে। স্টপ লস একটা রিস্ক লেভেলে পরে থাকে। তাই প্রাইস মুভমেন্টের সাথে সাথে স্টপ লস লেভেলও উপরে উঠতে থাকে।
ATR স্টপ লস ফর্মুলা
Entry - 2xATR
অর্থাৎ এন্ট্রি যদি ২০ টাকায় হয় এবং ATR ভেলু যদি ১.১৩ হয় তবে
স্টপ লস = ২০ - (২ x ১.১৩) বা ২০ - ২.২৬ বা ১৭.৭৪ (নিচের চিত্র দেখুন)।
চার্ট স্টপও তেমন একটা পদ্ধতি। চার্টে যদি বলে এইটাই বটম তবে তার নিচে যাওয়ার অর্থ চার্টটাই ইনভেলিড।
অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষকরা তাদের স্টপ লসের সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় হিসাবে চার্টগুলি ব্যবহার পছন্দ করেন। সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্সের মতো পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে তারা স্টপ লস নির্ধারন করেন।
উদাহরণস্বরূপ নীচের চিত্রটিতে যেমন দেখানো হয়েছে, স্টকটি একটি শক্তিশালী সাপোর্ট এবং একটি ট্রেন্ড লাইন তৈরি করে, পরে ট্রেন্ড লাইনটি ভেঙে দেয়। এই মুহুর্তে আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিস দুটি স্টপ লস পয়েন্টের সম্ভাবনা দেখায়। এখন একে অপরকে বাছাই করা ব্যবসায়ীদের বিবেচনার বিষয়।
চার্ট স্টপ - চিত্র ১
চার্ট স্টপ - চিত্র ২
এখানে লঙ্কা বাংলার একটা বাস্তব উদাহরণ।
(স্টকটা এই প্যাটার্ন ও প্রাইস ১০০% ফলো করে ফলে ব্যবহারকারিদের এন্ট্রি, এক্সিট, স্টপ লস নিরূপন করা সহজ হয়।)
আপনার মনে রাখা উচিত যে কোনও স্টপ লস অর্ডার সর্বদা নিখুঁতভাবে কাজ করে না। হঠাৎ কোন নিউজে সাপোর্ট স্তরটি ব্রেক করতে পারে। তবুও, এগুলি মূলধনের ক্ষতি সীমাবদ্ধ করার কার্যকর উপায়।
৪। টাইমস্টপ
একটা ট্রেডের জন্য আপনি অনির্দিষ্টকাল অপেক্ষা করতে পারেন না।
Time stop সেই নির্দিষ্ট সময় যখন এটি প্রত্যাশার তুলনায় বৃদ্ধি না ঘটে। বেশিরভাগ দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের কাছে তারা কী প্রত্যাশা করে তার একটি অস্পষ্ট বা সাধারণ ধারণা রয়েছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা এমন সেটআপগুলি সন্ধান করে যা দামের মধ্যে প্রায় তাত্ক্ষণিক বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেয়।
নিচের পদ্ধতিগুলি উপরের ৪টি পদ্ধতির এক বা একাধিক পদ্ধতির সংমিশ্রন।
স্ট্র্যাটেজি ইনভেলিডেশন
আপনার একটা ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি আছে। কখনো প্রাইস এর বাইরে গেলে স্টপলস দেয়া উচিত।
সাপোর্ট মেথড
Support Method
আপনি যখন বুঝতে পারেন শেয়ারটা সাপোর্টের নিচে গেলে আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নাই তখন পরবর্তি সাপোর্ট লেভেলে স্টপলস দেয়া ভাল।
ইনভেলিডেশন পয়েন্ট মেথড
টেকনিক্যালি কিছু ইনভেলিডেশন পয়েন্ট আছে, যেমন এলিয়ট ওয়েভে ওয়েভ-৪ যদি ওয়েভ-১ এর টেরিটরিতে ঢুকে পরে। এই ধরনের ইনভেলিডেশন পয়েন্টে স্টপলস দেয়া প্রয়োজন।
মুভিং এভারেজ মেথড
Moving average method
শেয়ার যখন বুলিশ অবস্থায় থাকে তখন দুই একটা সুইং লো ছাড়া
মুভিং এভারেজের নিচে নামে না। আপনি সম্ভাব্য সুইং লো’তে স্টপ লস দিতে পারেন। আপনার ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ি আপনি মুভিং এভারেজ ব্যবহার করতে পারেন। শর্ট টার্মের জন্য ১৫ বা ২১, মিড ও লং টার্মের জন্য ৫০, ১০০ বা ২০০ বা আপনি যেটাতে স্বাচ্ছন্দে ট্রেড করে থাকেন। ATR (average true range) ও একটা ভোলাটিলিটি ইন্ডিকেটর।
ট্রেইলিং স্টপ মেথড
Trailing Stop Method
মূল্য কতদূর যাবে আমরা নিশ্চিত না । যখন বেশ দূরে যায় তখন কিছু্দূর পর পর মূল্য সংশোধন হয়। এটা ফান্ডামেন্টাল, এটিয়ার ভেলু, চার্ট প্যাটার্ন ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। আমি এখানে শুধু চার্ট প্যাটার্ন নিয়েই আলোচনা করব।
সাধারণ প্যাটার্নগুলিতে রেজিস্ট্যান্স নির্ভর সংশোধন হয়। আবার ফাইবো নির্ভর প্যাটার্নগুলিতে বিভিন্ন ফাইবো লেভেলে মূল্য সংশোধন হয়। আবার রাউন্ড ফিগার যেমন ৫০, ৭৫, ১০০ এক ধরনের মনস্তাত্বিক রেজিস্ট্যান্স। এখানেও মূল্য সংশোধন হয়। আমরা দুইভাবে স্টপলসের ব্যবহার করতে পারি। এক, প্রতি রেজিস্ট্যান্সে লাভ তুলে নিয়ে আবার নতুন স্টপলস বসিয়ে রি-এন্ট্রি দিয়ে। দুই, ট্রেড ধরে রেখে মূল্য যখন আবার উঠতে থাকে তখন নতুন সাপোর্টে স্টপলস বসিয়ে। মনে রাখতে হবে আগের রেজিস্ট্যান্সই বর্তমান সাপোর্ট।
পজিশন সাইজিং স্ট্র্যাটেজি স্টপলস ও পজিশন সাইজিং
আগে আপনার স্টপলস নির্ধারন করুন। তারপর পজিশন সাইজিং করুন।
পজিশন সাইজিং সম্বন্ধে মানি ম্যানেজমেন্ট অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।